জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ গড়তে বাবার মতো নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এদেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই আমার একমাত্র কাজ।’ শনিবার রাজধানী বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ২১আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলা দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আল্লাহ মানুষকে একটা কাজ দেন। সেটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সময় দেন। জাতির পিতা দেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছেন, দেশ গড়ে তুলেছেন।
তিনি দেশ গড়ে তুলছিলেন কিন্তু তার যে স্বপ্ন ছিলো অর্থনৈতিক মুক্তি নিয়ে এসে মানুষকে একটা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ দেবেন, সেটি আর করে যেতে পারলেন না।’ “আল্লাহ যখন বাঁচিয়ে রেখেছেন, আমি বাবার পথ ধরেই এদেশের মানুষের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছি। বোমা, গুলি অনেক কিছুই চোখের সামনে দেখেছি। বারবার মৃত্যুকে সামনে পেয়েছি। বারবার আমার সামনে মৃত্যু এসে দাড়িয়েছে। যেভাবে হোক আমি বেঁচে গেছি। আল্লাহ বাঁচিয়েছে। এতো বাধা অতিক্রম করেছি। এদেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই আমার একমাত্র কাজ”, বলেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আল্লাহ বারবার বাঁচাচ্ছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টেও আমার দেশের বাইরে যাওয়ার কথা না।
কিছুতেই যাবো না। তবুও কেন জানি চলে যেতে হলো রেহানাকে সাথে নিয়ে। রাসেলকেও নেয়ার কথা ছিলো। সে অসুস্থ ছিলো মা ওকে ছাড়লো না। ছয়টা বছর দেশের মাটিতে আসতে পারিনি। আসতে দেয়া হয়নি। আওয়ামী লীগ যখন সভাপতি নির্বাচিত করলো একপ্রকার জোর করেই দেশে ফিরে এসেছি। দেশে ফিরে আসার পর থেকেই যখন যেখানে গেছি প্রতিটি জায়গায় বোমা হামলা, মঞ্চ পুড়িয়ে দেয়া, নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে। সুস্থভাবে কখনো রাজনীতি করতে পারিনি। প্রতি পদে পদে বাধা। সেই বাধা অতিক্রম করে দলকে সুসংগঠিত করে আজকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পেরেছে।
’ আওয়ামী লীগ কখনো ক্ষমতায় আসতে পারবে না বলে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার দম্ভোক্তির কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া দম্ভোক্তি করেছিলেন, একশ’ বছরেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারবে না। কিন্তু আল্লার বিচার আছে। উপরে তো তিনি আছেন। সেটি সবাই ভুলে যায়। ক্ষমতায় থেকে নিজেকে এতো বেশি বড় মনে করে যে দম্ভোক্তিগুলো করে যায়। যিনি (খালেদা জিয়া) বলেছিলেন, বিরোধী দলের নেতাও হতে পারবো না। আজকে তিনিই বিরোধী দলীয় নেতাও হতে পারেননি।’ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ইতিমধ্যে সেই হত্যকান্ডের বিচার হয়েছে। কয়েকজনের ফাঁসির আদেশ এবং কয়েকজনের যাবজ্জীবন হয়েছে।
বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের ওপর বিএনপি-জামাতের নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, তাদের নির্যাতন-অত্যাচারে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী হয় মৃত্যুবরণ করেছেন, না হলে পঙ্গু হয়ে আছেন। যাকে যেখানে খবর পাচ্ছি সকলকে সহযোগিতা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। এতো ত্যাগের মধ্যেই কিন্তু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গড়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগ আছে বলেই এদেশের মানুষ দু’বেলা খাবারের ব্যবস্থা, বাসস্থান, চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়েছে।
এ সময় ২১ আগস্টে আহত নেতাকর্মীদের চিকিৎসা দেয়া ডাক্তারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং যারা আহত মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন সেই সব নেতাকর্মীদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আলোচনায় সভায় ২১ আগস্টের নারকীয় দুঃস্মৃতিচারন করে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, কার্যনির্বাহী সদস্য ও বিএমএ’র সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, উত্তরের সভাপতি বজলুর রহমান প্রমুখ।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।